রবিবার , ২৬ মে ২০২৪ | ২রা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. English
  2. অনুষ্ঠানসমূহ
  3. অর্থ বাণিজ্য
  4. আন্তর্জাতিক
  5. ইসলাম
  6. ক্যারিয়ার
  7. খুলনা
  8. খেলা
  9. চট্টগ্রাম
  10. জাতীয়
  11. ঢাকা
  12. তথ্যপ্রযুক্তি
  13. পরিবেশ
  14. ফটো গ্যালারি
  15. বরিশাল

থানা লকআপ থেকে ডা. জনি নিখোঁজ: দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারি

প্রতিবেদক
the editors
মে ২৬, ২০২৪ ৯:১৮ অপরাহ্ণ

মেহেদী হাসান শিমুল: আট বছর আগে থানার লকআপ থেকে ডা. মোখলেছুর রহমান জনি নিখোঁজের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায়
সাতক্ষীরা সদর থানার তৎকালীন ওসি এমদাদ ও এসআই হিমেলের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারি করেছে আদালত। তবে, জামিন পেয়েছেন সদর থানার সাবেক ওসি ফিরোজ হোসেন মোল্লা।

রোববার (২৬ মে) সাতক্ষীরার মূখ্য বিচারিক হাকিম এস এম আশিকুর রহমান এক জনাকীর্ণ আদালতে এই আদেশ দেন। একই সাথে ওসি এমদাদ শেখ ও এসআই হিমেলের আইনজীবীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

গ্রেপ্তারী পরোয়ানার আসামিরা হলেন, পিরােজপুর জেলা সদরের আব্দুল আজিজ শেখের ছেলে সাতক্ষীরা সদর থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এমদাদুল হক শেখ ও নড়াইল জেলার লোহাগড়া থানার পাংখাচর গ্রামের সাঈদুর রহমানের ছেলে ও সাতক্ষীরা সদর থানার সাবেক উপপরিদর্শক হিমেল হোসেন।

আর জামিনে মুক্তি পাওয়া আসামি হলেন, গোপালগঞ্জ জেলা সদরের করপাড়া গ্রামের আব্দুল কাদের মেল্লার ছেলে ও সাতক্ষীরা সদর থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফিরোজ হোসেন মোল্লা।

মামলা ও ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ২০১৬ সালর ৪ আগস্ট রাত সাড় ৯টার দিকে অসুস্থ বাবার জন্য বাইসাইকেলে করে সাতক্ষীরা শহরের লাবনী সিনেমা হলের সামনে ঔষধ কিনতে যান শহরের পারকুকরালির শেখ আব্দুর রাশেদ এর ছেলে হোমিও চিকিৎসক মোখলেছুর রহমান জনি। এসময় সদর থানার উপপরিদর্শক হিমেল হোসেন তাকে থানায় ধরে নিয়ে যান। এরপর ৫, ৬ ও ৭ আগস্ট স্ত্রী জেসমিন নাহার রেশমা ও বাবা আব্দুর রাশেদ স্বজনদের সঙ্গে নিয়ে থানা লক আপে থাকা ডা. জনিকে খাবার দিয়েছেন, তার সঙ্গে কথা বলেছেন।

এসময় তারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এমদাদুল হক শেখ ও উপপরিদর্শক হিমেলের সঙ্গে কথা বললে জনির আল্লাহর দল নামে একটি জঙ্গি সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ততা রয়েছ বলে জানান। পরে তাকে মুক্তি দেওয়ার জন্য থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ এমদাদ হোসেন ও উপপরিদর্শক হিমেল ডা. জনির স্ত্রী রেশমার কাছে মােটা অংকের টাকা দাবি করেন। টাকা না দিলে ক্রসফায়ারের হুমকিও দেন। এরপর ৮ আগস্ট থানায় গেলে জনিকে আর পাওয়া যায়নি। বিষয়টি জেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি মুনসুর আহম্মেদ, তৎকালীন পুলিশ সুপার আলতাফ হোসেন (সোনা আত্মসাতের অভিযোগে ২০২১ সালে চাকুরিচ্যুত), সাতক্ষীরার তৎকালীন জেলা প্রশাসক, জনপ্রতিনিধি ও সাংবাদিকদের জানিয়েও কোনো লাভ হয়নি। এ ঘটনায় ওই বছরের ২৬ ডিসেম্বর পুলিশ সাধারণ ডায়েরি না নেওয়ায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন জেসমিন নাহার রেশমা। অবশেষে ২০১৭ সালের ২ মার্চ হাইকার্টে রিট পিটিশন দাখিল করেন তিনি। এতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ আটজনকে বিবাদী করা হয়। পরবর্তীতে হাইকোর্ট মোখলছুরকে ওই বছরের ১২ এপ্রিলের মধ্যে সাতক্ষীরার বিচারিক হাকিম আদালতে হাজির করানোর নির্দেশের পাশাপাশি ৯ মে এ সংক্রান্ত তদন্ত প্রতিবদন দাখিলের জন্য ঢাকা লিগ্যাল এইড সেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এএসএম জাভিদ হাসানকে নির্দেশ দেওয়া হয়। তদন্তকালে সাতক্ষীরা সদর থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফিরোজ হোসেন মোল্লা নিখােঁজ ডা. মোখলেছুর রহমান জনি আল্লার দল নামে একটি জঙ্গী সংগঠন করতেন বলে লিখিতভাবে উল্লেখ করেন। প্রতিবেদনটি রিটকারির বিপক্ষে যায়। পরে আদালতের নির্দেশে ২০১৭ সালের ৩ জুলাই সাতক্ষীরার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম হাবিবুল্লাহ মাহমুদ হাইকার্টে বিচারিক তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদনে থানা লক আপ থেকে ডা. জনির নিখোঁজ হওয়ার সত্যতা পাওয়া গেছে মর্মে প্রতীয়মান হয়।

প্রতিবেদনে তৎকালীন পুলিশ সুপার আলতাফ হোসেন, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এমদাদ শেখ, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফিরাজ হোসেন মোল্লা ও উপপরিদর্শক হিমেল হোসেন হোমিও চিকিৎসক ডা. মােখলেছুর রহমানকে লাবনী মোড় থেকে তুলে আনা, থানা লকআপে নির্যাতন ও সেখান থেকে নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় জড়িত বলে উল্লেখ করা হয়।

পরবর্তীতে এক আদেশে ওই বছরের ৩ অক্টােবর এ সম্পর্কিত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেওয়া হয়। পিবিআই তদন্ত প্রতিবেদনে ডা. জনিকে থানায় এনে আটক রাখার সত্যতা মেলেনি বলে উল্লেখ করে।

২০১৮ সালের ২৪ জানুয়ারি তদন্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনা শেষে হাইকার্ট ডা. জনি নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি নিয়ে তার তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নেওয়ার জন্য থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এমদাদুল হক শেখ, ফিরোজ হোসেন মোল্ল্যা ও উপপরিদর্শক হিমেল হোসেনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা গ্রহণ ও একইসাথে তাদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করা যেতে পারে বলে এক আদেশে উল্লেখ করেন।

পরবর্তীতে বিভিন্ন জায়গার আইন সহায়তা চেয়েও না পেয়ে মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন অ্যাড. সুলতানা কামালের সহায়তায় নিখোঁজ জনি’র বাবা শেখ আব্দুর রাশেদ ২০২১ সালর ১৭ আগস্ট সাতক্ষীরা মূখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন।

মামলায় সদর থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এমদাদ শেখ, ফিরোজ হোসেন মোল্লা ও উপপরিদর্শক হিমেলের বিরুদ্ধে জনিকে অপহরণ করে হত্যার পর লাশ গুমের অভিযোগ আনা হয়।

মামলার নথিতে হাইকার্টে দায়েরকৃত রিট পিটিশনের আদেশের জাবেদা নকল, রিট পিটিশন, বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন ও পিবিআই প্রতিবদনের ছায়ালিপি জমা দেওয়া হয়।

মামলার তদন্ত প্রতিবেদনে গোয়েন্দা, অপরাধ ও তদন্ত শাখার কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক হারুণ অর রশীদ আসামিদের বিরুদ্ধে বাদির আনীত অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন মর্মে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন।

প্রতিবেদনে ডা. জনির শ্বাশুড়ি কলারায়া উপজেলার লাঙ্গলঝাড়া গ্রামের মনোয়ারা খাতুনের জমি তৎকালিন ইউপি সদস্য ফারুক হোসেন (বর্তমান প্রয়াত) কৌশলে ইউনিয়ন পরিষদের নামে লিখে নেওয়ার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার তদ্বিরকারক হিসেবে ডা. মোখলেছুর রহমান জনিকে শায়েস্তা করার জন্য কলারােয়া থানা থেকে হঠাৎ বদলী হয়ে আসা উপপরিদর্শক হিমেলের মাধ্যমে শহরের লাবণী মোড় থেকে তুলে আনা হয় মর্মে উল্লেখ করা হয়।

পরবর্তীতে এমদাদ শেখ ও হিমেলের পরিকল্পনায় ডা. মোখলেছুর রহমান জনি থানা লকআপ থেকে নিখোঁজ হন। নিখোঁজের ঘটনায় সাধারণ ডায়েরি করতে গেলে তা গ্রহণ করেননি তৎকালিন থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফিরোজ হোসেন মোল্লা।

এর আগে ২০১৮ সালে উপপরিদর্শক হিমেলের বিরুদ্ধে ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এমদাদ শেখ ও ফিরাজ হোসেন মোল্লার বিরুদ্ধে যথাক্রমে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়।

ওই মামলায় এমদাদ শেখ ও ফিরোজ হোসেন মোল্লাকে চাকুরি থেকে বিদায় দিয়ে বাড়িতে পাঠানো হয়। ওই আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে এমদাদ শেখ উচ্চ আদালতে গেলে পরবর্তীতে তাকে পাবনা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্ব দেওয়া হয়। এখন তিনি অবসরে আছেন।

এ ব্যাপারে নিখোঁজ ভিকটিম ডা. মোখলেছুর রহমানের বাবা শেখ আব্দুর রাশেদ জানান, এমদাদ শেখ ও হিমেল আদালতে হাজিরা দিয়েও কাঠগড়ায় না উঠে পালিয়ে যাওয়ায় আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারির নির্দেশ দিয়েছে।

তিনি বলেন, তার ছেলেকে জীবিত বা মৃত অবস্থায় উদ্ধার করতে আসামিদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।

এজন্য কোন আইনে আসামিদের সিআর মামলা থেকে জিআর মামলায় বা অন্য কােন প্রক্রিয়ায় রিমান্ডে নেওয়া যায় তার আইনি প্রক্রিয়া চালিয়ে যাবেন তিনি।

সাতক্ষীরা জজ কাের্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাড. মোসলেমউদ্দিন ও অ্যাড. ফরহাদ হোসেন বলেন, থানা লকআপে তিনদিন আটক রাখার পর ডা. মোখলছুর রহমান জনি নিখোঁজ হয়ে গেল। এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনায় ভিকটিমকে উদ্ধারে আসামিদের রিমান্ডে নেওয়া অত্যন্ত জরুরী। তাই এ সংক্রান্ত আইনি ব্যাখ্যা চেয়ে তারা ঢাকার জ্যেষ্ঠ আইন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা চালিয়ে যাচ্ছেন। একজন বাবা ও মা তাদের সন্তানকে, স্ত্রী তার স্বামীকে ও সন্তান তার বাবাকে জীবিত বা মৃত অবস্থায় দেখতে পাবে না এটা হতে পারে না।

সাতক্ষীরা আদালতের পুলিশ পরিদর্শক মেহেদী হাসান সাবেক ওসি এমদাদ শেখ ও এসআই হিমেলের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারী পরোয়ানার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আগামী ২৭ জুন মামলার পরবর্তী দিন ধার্য্য করা হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

সর্বশেষ - জাতীয়

আপনার জন্য নির্বাচিত

ঘূর্ণিঝড় রিমাল: সুন্দরবনে মাছ ধরতে গিয়ে ফেরেনি ৩ জেলে, উদ্বিগ্ন পরিবার

আ’লীগে যোগ দেয়া নেতাদের নিয়ে শ্যামনগরে বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল

রোববার সাতক্ষীরা সরকারি কলেজ সড়ক অবরোধ করবে নাগরিক কমিটি, সফল করার আহবান

শ্যামনগরে মাদকাসক্ত স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ

দেবহাটায় কোকাকোলার এসআরকে পিটিয়ে টাকা কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ

শিল্পকলার সঙ্গীত ও নৃত্য প্রশিক্ষণ সম্পন্ন

এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা ১৭ আগস্ট শুরু

‘ফিজ’ নামটা কিভাবে এলো জানালেন মুস্তাফিজ

শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় সাংবাদিক আনিসুর রহিমকে স্মরণ

এলডিসি উত্তরণ: বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার আহ্বান

error: Content is protected !!