প্রতাপনগর প্রতিনিধি: আশাশুনির কুড়িকাহুনিয়ায় বেড়িবাঁধের ভাঙন রোধে বরাদ্দকৃত প্রায় ৩৫ হাজার জিও ব্যাগ ব্যবহার না করে আত্মসাত করাসহ অনিয়ম ও দুর্নীতি অভিযোগ তদন্ত পূর্বক অভিযুক্ত পাউবো কর্মকর্তা আলমগীর ও ঠিকাদার সুজা আহম্মেদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ এবং আত্মসাৎকৃত বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ডাম্পিংয়ের কাজ সম্পন্ন করার দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার বিকেলে উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের কুড়িকাহুনিয়া লঞ্চঘাট এলাকায় বেড়িবাধের উপর এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
নদী ভাঙনে বিপর্যস্ত প্রতাপনগর ইউনিয়নের সর্বস্তরের মানুষের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, আকরাম হোসেন সানা, আবু আব্দুল্লাহ, ব্যবসায়ী আনিছুজ্জামান, ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলাম সানা, ব্যবসায়ী আহসান উল্লাহ প্রমুখ।
বক্তারা পাউবোর কাজের মান নিয়ে অভিযোগ তুলে বলেন, এমনিতেই কাজে দীর্ঘসূত্রিতা দেখা গেছে। তার উপর জিও ব্যাগে বালু ভরাট না করে অনেক বস্তায় মাটি ভরাট করা হয়েছে। সঠিক স্থানে ডাম্পিং না করে শ্রমিকরা বস্তা কেটে নদীতে বালু ফেলে দিয়েছে। কাজের এমন পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ঠিকাদারদের সমন্বয়ে সৃষ্ট সিন্ডিকেট স্থানীয়দের উপর চড়াও হয়। এ সিন্ডিকেটের অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণেই উপকূল জুড়ে মানুষের মাঝে দুর্ভোগ ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। এই দুর্ভোগ থেকে বাঁচতে বক্তারা প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
অভিযোগ করে স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ শহিদুল্লাহ সানা বলেন, সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড-২ এর পোল্ডার নং ৭/২ এর অধীনে কুড়িকাহুনিয়া লঞ্চঘাট এলাকায় নদী ভাঙন রোধে সর্বশেষ বরাদ্দকৃত ৭টি প্যাকেজে প্রায় ৬০ হাজার জিও বস্তা ডাম্পিংয়ের কথা থাকলেও এ পর্যন্ত ২২ থেকে ২৫ হাজার বস্তা ডাম্পিং করা হয়েছে। বাকি প্রায় ৩৫ হাজার বস্তা কোথায়? স্থানীয় জনপ্রতিনিধি হিসেবে পাউবো ও ঠিকাদারের কাছে কাজের ওয়ার্ক আউট ও কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে আমাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলা দিয়ে হয়রানি করার হুমকি দেওয়া হয়। বক্তারা আরও বলেন ইতোপূর্বে এ বেড়িবাঁধে ১২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হলেও ২ লক্ষ টাকার কাজও করা হয়নি।
স্থানীয় বাসিন্দা আকরাম হোসন সানা ঠিকাদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, ডাম্পিং কাজের ফিল্ড তদারককারী আছাদ ও কামরুজ্জামান (টুকু) এর শ্রমিকরা বালুভর্তি জিও বস্তা ডাম্পিং না করে বস্তা কেটে বালু নদীতে ফেলে বস্তা গায়েব করে ফেলেছে। স্থানীয়রা গত ১৯ এপ্রিল প্রায় ৫০টি জিও বস্তা কাটা অবস্থায় শ্রমিকদেরকে হাতে নাতে ধরে ফেলে। এঘটনার পর কোম্পানির লোকেরা কাজের যাবতীয় সরঞ্চাম গুটিয়ে কাজ হবে না ঘোষণা দিয়ে কাজের ফিল্ড থেকে চলে যায়।
স্থানীয় যুবক আব্দুল্লাহ পাউবোর দায়িত্বপ্রাপ্ত এস.ও আলমগীর কবিরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, ৭টি প্যাকেজের কাজ শুরুর দিকে বালু ভর্তি বস্তা সেলাই করার পর ডাম্পিংয়ের জন্য লেবার সরদার ও স্থানীয়দের হিসেবে ৪৬৭০টি বস্তা গণনা করা হয়। অথচ এসও আলমগীর কবির একই বস্তা গণনা করে ৫৩০২ টি লিপিবদ্ধ করেন। গণনার এমন তারতম্যের বিষেয়ে জানতে গেলে এসও আলমগীর কবির বলেন, আমরা কৈফিয়ত দিতে আসিনি। বেশি বাড়াবাড়ি করলে মামলা দিয়ে জেলে ভরে দিব।
বক্তারা তাদের বক্তব্যে স্থায়ী বেড়ি বাধ নির্মাণ, ভাঙনকূলে কনক্রিটের ব্লক ডাম্পিং, লবণাক্ততা হ্রাসে কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণ, ফসলের নিরাপত্তা ও কৃষক বাঁচানোর দাবি জানান।