উন্নয়নের কাণ্ডারী ডা. রুহুল হক

মাহমুদুল হাসান শাওন, দেবহাটা: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ক্ষমতাসীন দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পাশাপাশি বর্তমানে সংগঠনকে মজবুত ও তৃণমূলের চাহিদাকে প্রাধান্য দিয়ে প্রার্থী বাঁছাইয়ে মনোনিবেশ করেছে রাজনৈতিক দলগুলি। সাতক্ষীরাতেও তার ব্যতিক্রম নয়।

এক্ষেত্রে সাতক্ষীরা-৩ আসনে ক্ষমতাসীন দলে বিকল্প নেই আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য, সাবেক স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি, সাতক্ষীরা-৩ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হক।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আস্থাভাজন ডা. রুহুল হকের হাতেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে সাতক্ষীরার উন্নয়নের চাকা। একারণে জেলার অন্যান্য সংসদীয় আসনগুলোতে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীজট থাকলেও সাতক্ষীরা-০৩ আসনে এখনও পর্যন্ত অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হকের বিকল্প নেই বলে মনে করছে ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরা।

১৯৮৪ সালে সৃষ্ট এ আসনে বর্তমানে ভোটার সংখ্যা প্রায় ৪ লাখ। আসনটি তৈরি হওয়ার পর থেকে জাতীয় সংসদ নির্বাচন গুলোতে চারবার আওয়ামী লীগ, তিনবার জামায়াত ও একবার করে জাতীয় পার্টি এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়লাভ করেছেন।

সাতক্ষীরা-০৩ (দেবহাটা, আশাশুনি ও কালীগঞ্জ আংশিক) আসনে ২০০৮ সালে ডা. আ ফ ম রুহুল হক প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর কেবলমাত্র নিজের নির্বাচনী এলাকার উন্নয়নে সীমাবদ্ধ না থেকে কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন অবহেলিত গোটা সাতক্ষীরা জেলার উন্নয়নের দায়িত্ব। গত ১৫ বছরে নিজ নির্বাচনী এলাকায় শতভাগ বিদ্যুতায়ন, রাস্তাঘাট, ব্রীজ-কালভার্ট নির্মাণের পাশাপাশি সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় বয়স্ক, বিধবা, প্রতিবন্ধী ও মাতৃত্বকালীন ভাতাসহ শতভাগ ভাতার ব্যবস্থা নিশ্চিত করেছেন। সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় ভাঙন কবলিত দেবহাটা, কালীগঞ্জ ও আশাশুনিতে নদী ভাঙনরোধে জরাজীর্ণ বেড়িবাঁধ মেরামত ও এলাকাভেদে নতুন বাঁধ নির্মাণের ব্যবস্থা করেছেন। ঘূর্ণিঝড় ও বন্যায় প্রাণহানি এবং ক্ষয়ক্ষতি হ্রাসে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে একের পর এক বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র স্থাপনের ব্যবস্থা করেছেন। পাশাপাশি কর্মসৃজন প্রকল্প, টিআর, কাবিখা, কাবিটা ও এডিপি’র মতো প্রকল্পের মাধ্যমে নির্বাচনী এলাকার তিনটি উপজেলার অবকাঠামোগত উন্নয়নে আমূল পরিবর্তন এনেছেন ডা. রুহুল হক। তাছাড়া মুজিববর্ষ ঘিরে অসংখ্য গৃহহীন ও ভূমিহীনদের মাঝে জমিসহ সরকারি অর্থায়নে নির্মিত সেমিপাকা ঘর বরাদ্দ প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নে তার ব্যাপক অবদান রয়েছে।

বিশ্ববরেণ্য এই চিকিৎসক সাতক্ষীরার স্বাস্থ্যখাতে ব্যাপক পরিবর্তন এনেছেন। কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নয়নের পাশাপাশি অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং সাধারণ মানুষকে কমিউনিটি ক্লিনিকমুখী করতেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।

এছাড়া দেবহাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ৫০ শয্যায় উন্নীতকরণ, নলতায় ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি (আইএইচটি) এবং ম্যাটস নির্মাণ, সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ সবই হয়েছে ডা. রুহুল হকের হাতেই।

আর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে সাতক্ষীরায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে ডা. রুহুল হকের অক্লান্ত প্রচেষ্টা সফল হয়েছে সম্প্রতি সাতক্ষীরা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুমোদনের মাধ্যমে।

নির্বাচনকে সামনে রেখে ইতোমধ্যেই নির্বাচনী এলাকায় সভা-সভাবেশ, দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে মতবিনিময় এবং ছাত্র ও যুব নেতৃত্বকে সুসংগঠিত করতে ডা. রুহুল হক এমপিসহ তার পক্ষে দলের একাধিক টিম নিয়মিত রাজনীতির মাঠে কাজ করছেন।

এসবের মধ্যদিয়ে সাতক্ষীরা-৩ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মনোনয়নে অপ্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছেন ডা. রুহুল হক।

তবে ক্ষমতাসীন দলের হয়ে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক শেখ এজাজ আহমেদ স্বপন, নর্দান ইউনিভার্সিটির ভিসি প্রফেসর ড. ইউসুফ আবদুল্লাহ, আশাশুনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান এবিএম মোস্তাকিম, দেবহাটার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও সাবেক উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাড. গোলাম মোস্তফা।

আগামী নির্বাচন প্রসঙ্গে ডা. রুহুল হক বলেন, সংসদ সদস্য হিসেবে গত প্রায় ১৫ বছরে আমার নির্বাচনী এলাকায় সাধ্যমতো উন্নয়ন করেছি। আগামীতে আরও উন্নয়ন পরিকল্পনা রয়েছে। বরাবরই ভোটারদের কাছে আমার জনপ্রিয়তা রয়েছে। যে কেউ মনোনয়ন প্রত্যাশা করতে পারেন। মনোনয়ন পেলে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ভুলে নেতাকর্মী ও সর্বস্তরের জনগণ আমাকে পুনরায় এ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত করবেন বলে আমি দৃঢ় বিশ্বাসী।